বীমা নিয়ে মানুষকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০২ মার্চ, ২০২২, 12:56 AM
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০২ মার্চ, ২০২২, 12:56 AM
বীমা নিয়ে মানুষকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
গ্রাহক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বীমা মানে আমানত। তাই কেউ যেন তার প্রাপ্য চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। বিমা নিয়ে বিভিন্ন হয়রানি হয়, এসব বন্ধ করতে হবে। মঙ্গলবার (১ মার্চ) জাতীয় বীমা দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভাচুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বের মতো বীমা ব্যবস্থা আমাদের দেশেও চালু হোক, সেটাই আমরা চাই। আমাদের সরকার বেশ কয়েকটি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অনুমতি দিয়েছে, এগুলো আরও কার্যকর করতে হবে। আমরা স্বাস্থ্যবীমাও চালু করতে চাই। এজন্য কাজ শুরু করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনী ওয়াদা অনুযায়ী আমরা সবার জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছি। এতে সবার জীবনের নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব হবে। বীমা নিয়ে মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে। গ্রাহকের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা দিতে হবে। মানুষকে বীমার বিষয়ে আগ্রহী করতে নতুন নতুন পদ্ধতি কাজে লাগাতে হবে। জনগণকে উৎসাহী করতে আরো ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।
বীমা সেবাকে জনপ্রিয় করাসহ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি বীমা কোম্পানিগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অনেকেই ব্যবসা করতে গিয়ে বীমা করে। এরপর ভুল বা অসত্য তথ্য দিয়ে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রিমিয়াম থেকে টাকা দাবি করে। আসলে হয়ত এই দাবি সঠিক নয়। এসব বিষয়ে আমাদের সর্তক হতে হবে। যারা এসব পরীক্ষা করে তাদেরও ভালোভাবে শিক্ষা দিতে হবে। তারা যেন আবার অন্য কোনোভাবে ওই অল্প ক্ষতিকে বড় ক্ষতি করে না দেখায়।
গ্রাহক যাতে হয়রানির শিকার না হয় সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীমা মানে আমানত। তাই কেউ যেন তার প্রাপ্য চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার না হয়। বীমা নিয়ে নানা হয়রানি হয়, এসব বন্ধ করতে হবে।
বীমা দাবি নিষ্পত্তি ও বীমার আর্থিক লেনদেনে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, গ্রাহকরা বীমার ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামটা যাতে সঠিকভাবে দেন, সেটাও যেমন প্রয়োজন আবার বীমার টাকাও যেন সঠিকভাবে পান, সে বিষয়েও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য প্রবাসী কর্মী বীমা, বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি মোকাবেলায় হাওর এলাকায় সীমিত পরিসরে আবহাওয়া সূচকভিত্তিক শস্যবীমা চালু করা হয়েছে। পদ্মা বহুমুখী সেতু, ঢাকা মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো মেগা প্রকল্পগুলোর বীমা ঝুঁকি সাধারণ বীমা করপোরেশন গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা/অভিভাবকের অকাল মৃত্যুতে/শারীরিক অক্ষমতায় তাদের শিক্ষাজীবন যাতে ব্যাহত না হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবীমা’ পরিকল্প চালু করা হয়েছে। সর্বসাধারণের দুর্ঘটনাজনিত ক্ষয়-ক্ষতি কমাতে সাধারণ বিমা করপোরেশন ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষাবীমা’ চালু করেছে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল। বীমা ব্যবস্থাকেও ডিজিটাইজ ও অটোমেশনের মধ্যে আনতে হবে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি বীমা খাতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দেন। তার সময়ে ৯ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ৪০ বছর আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ।
বীমা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তত্ত্বাবধান করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বীমা অধিদপ্তর গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন।