ঢাকা ২৩ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
সড়ক সংস্কারের দাবীতে ৫ গ্রামের লোকের মানববন্ধন ঢাকার পশুহাটে শেকৃবির ইন্টার্ন ভেটেরিনারি ডাক্তারদের চিকিৎসাসেবা শালিখায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আগ্নেয়াস্ত্র সহ আটক তিন বকশীগঞ্জে জিয়া পরিবারের ছবি অবমাননার অভিযোগ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে রামপালে দোয়া মাহফিল ও ত্রাণ বিতরণ বটিয়াঘাটায় মৎসজীবীদের নিয়ে জনসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে দুজনের মৃত্যু সেনাবাহিনীর অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদসহ গ্রেফতার ৪ মানিকগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকালে বিএনপি নেতাসহ আটক ২৪ উদোক্তা হিসেবে সম্মাননা পেলেন সাংবাদিক এ.কে.এম.মুজাহিদুল ইসলাম

কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে ছান্দড়ার জমিদার বাড়ি

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,  12:30 AM

news image

মো:আবু জাফর(লাল), মাগুরা।

মাগুরার- শালিখা উপজেলার ২নং তালখড়ি  ইউনিয়নের ছান্দড়া গ্রামের জমিদার বাড়ির ধ্বংসাবশেষ  কালের সাক্ষি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জনশ্রুত আছে যে এই জমিদার বাড়ি প্রায় দশ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত। বাড়িটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে জমিদাররা বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি হ্রদ  খনন করেছিল। যে হ্রদের সংযোগ ছিল এখান থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ফটকি নদীর সাথে। ধারণা করা হয় ১৭৯৩ সালে জাইগিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর জমিদারি প্রথা চালু হয়। জমিদারি প্রথা চালু হওয়ার প্রাক্কালে জমিদার "অলঙ্গ  মহন দেবরায়ের "শাসন দিয়েই শুরু হয় ছান্দড়া জমিদারি কার্যক্রম। এই কার্যক্রম পরিচালনার নিমিত্তে তৈরি করা হয় তৎকালীন আমলে দৃষ্টিনন্দন বিল্ডিংটি।  বিল্ডিংটি নির্মাণে  এর ভিত নির্মাণ করা হয় ৮০ ফুট চওড়া করে এবং ওয়াল গাঁথা হয় ৪০ ফুট চওড়া করে। বিল্ডিংটি নির্মাণে ইট,  চুন ও সুরকি ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত তিন তলা  বিশিষ্ট, যেখানে ১৬ টি কক্ষ এখনো দৃশ্যমান। বিল্ডিং এর সামনে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ উঁচু এবং ৩০ ফিট গোলাকার আকারে দুটি পিলার সম্মুক দরজার সামনে নির্মাণ করা হয়েছিল ।যেখানে হাতি বেঁধে রাখা হতো। চতুর্ভুজ আকারের বিল্ডিং এর মাঝে পারিবারিক পুকুর ছিল যা এখনো দৃশ্যমান।তৎকালে জমিদারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে যে সমস্ত নিয়মাবলী মানা হতো তন্মধ্যে নীল চাষ, জোরপূর্বক পাইক বরকন্দাজ দিয়ে খাজনা আদায়।   জমা জমির বিষয়ে প্রত্যেক জমিদারের অধীনে কয়েকজন করে নায়েব থাকতো, যে সমস্ত লোকেরা এ নায়েবের দায়িত্ব পালন করতো তারা ছিল অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও অর্থলোভী।যদি কোন ব্যক্তি সময় মত খাজনা দিতে অপারগতা প্রকাশ করতেন তাদের উপর নায়েবের লাঠিয়াল বাহিনী অত্যন্ত নিষ্ঠুর ও নির্মম ব্যবহার করতেন। জনশ্রুত আছে রাতে নারীদের ভয়ার্ত চিৎকারে রাতের আকাশ ভারী হয়ে উঠতো,কিছুক্ষণ পরে তা আবার প্রকৃতির সাথে নিরবতায় হারিয়ে যেত। স্থানীয় সুধীজন বাবু সুনীল আচার্য বলেন, মূলত জমিদারী প্রথা এক ধরনের জোরপূর্বক মানুষের সহায়-সম্পদ কেড়ে নেওয়ার কায়েমি রাজত্ব। জমিদাররা মূলত নিজেরাই লেখাপড়া শিখবে  এলাকায় কোন মানুষ শিক্ষিত হোক এইটা তারা কখনো চাননি। ফলে জমিদার এলাকার মানুষ অত্যন্ত গরিব এবং অশিক্ষিত। অসহায় মানুষের দীর্ঘশ্বাসের ফলে যে সমস্ত জায়গায় এই ধরনের জমিদারেরা বাস করতেন সর্বশেষ দেখা গেছে তাদের অস্তিত্ব ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গেছে। সুনীল বাবু বলেন শেষ পর্যন্ত জমিদারদের বংশের অবনী বাহন দেবরায় এখানে নিঃস্ব ভাবে জীবন যাপন করতেন। সর্বশেষ ১৯৭৭ সালে  তারঁ হয়।  মৃত্যুটি তার স্বাভাবিক ভাবে হয়নি। অর্ধাহারে, অনাহারে প্রকৃতির নির্মম বিচারে তার মৃত্যু হয়েছে। প্রকৃতি তাকে যে সাজা বা শাস্তি দিয়েছে তা বর্ণনাতীত। স্থানীয় লোকদের সাথে আলাপচারিতায় জানা যায়, এ জমিদার বংশের তেমন কেউ আরে পৃথিবীতে বেঁচে নাই। প্রকৃতি তাই, যেন এ জমিদারি বিল্ডিংকে এখনো রেখে দিয়েছে মানুষকে বুঝ দেওয়ার জন্য, যে পাপের রাজ্য আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যায়। হয়তোবা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার অনেক কিছু রয়েছে। জমিদারদের এই জায়গায় স্থানীয় লোকজনেরা একটি প্রাইমারি স্কুল, একটি হাই স্কুল, একটি মসজিদ ও বাজার নির্মাণ করেছেন। যেখানে সচার আচার এলাকার জনগণকে দেখা যায়। এলাকার জনগণের প্রত্যেকেরই এই জমিদারদের উপর অনেক দুঃখ কষ্ট খুব। এদের সবকিছু এইভাবে তিল তিল করে নিঃশ্বাস হয়ে যাক সকলে সেটাই চাই।



logo সম্পাদক ও প্রকাশক: মিরাজুন নুরিয়া